পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মাধুরীলতা: এক ভিনদেশী রঙ্গনা

ছবি
মাধুরীলতা/মধুমঞ্জরী/মধুমালতী মধুমালতীকে মাধবীলতা বলে ভুল করেন না, এমন মানুষের সংখ্যাই বরংচ কম। শুরুর দিকে তো এই আমিও মাধবীলতাই ডাকতাম। পছন্দের ফুল, সে সূত্রেই খানিকটা জানবার প্রয়াস। জেনে বুঝলাম, এ ভারী অন্যায় করে ফেলেছি! নিজের পছন্দকেও ঠিক জানিনা! খানিকটা প্রায়শ্চিত্ত করবারই আকাঙ্ক্ষায় জানতে শুরু করলাম মালতীকে। মালতীর কিন্তু অন্য নামও আছে! তাতেও সে খানিকটা মাধুরী মিশিয়েই রেখেছে; নাম তার মধুমঞ্জুরী,কেউবা ডাকে মাধুরীলতা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মুগ্ধ হয়েই অজানা মালতীকে স্বদেশী ভেবে মধুমঞ্জুরী নাম দিয়েছিলেন।  হিন্দিতে সে রঙ্গন-কা-বেল, লাল চামেলী নামে পরিচিত। মালতীর আদি বাস ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা,ইন্দোনেশিয়া,থাইল্যান্ডে। কেউ কেউ মনে করেন মালতী এসেছে মালয়েশিয়া থেকে। সেখান থেকে অভিযোজিত হয়ে বার্মায়(মায়ানমার)। বার্মার রেঙ্গুনের রেশ ধরেই ইংরেজিতে সে Rangoon Creeper বলে পরিচিত। গ্রীষ্ম-বর্ষায় মাধুরী ফোটে তার প্রাচুর্য নিয়ে। বছরের অন্যান্য সময়েও তার দেখা মেলে বলেই সে বারোমাসী।  কুঞ্জ তৈরীতে মালতীর জুড়ি নেই। কি অদ্ভুত সৌন্দর্য তার! লাল,সাদা আর গোলাপি রঙে সে যেন সাজিয়ে রাখে প্রকৃতিকে। সাদা থেকে ...

হলুদ গোলাপের দিন

ছবি
  আজ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪। দেখতে দেখতেই কখন যেনো সময় গড়িয়ে গেলো, এ বছরটাও ফুরিয়ে যাচ্ছে। অনেকের ঝুলিতেই অনেক অ্যাচিভমেন্টও জড়ো হয়েছে। কেউবা আবার হতাশ হয়ে দু'কদম পিছিয়েও পড়েছে। তেমনি একটি অ্যাচিভমেন্ট আমরা আমাদের ঝুলিতেও ভরতে পেরেছি। আমরা এ বছর গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করে নিজেদেরকে এ বৃহৎ প্রতিযোগিতার পৃথিবীতে ঠেলে দিয়েছি।  বেশ বড় হয়ে গেছি।  খানিকটা আনন্দ হয়েছে, তবে বাস্তবতা বোধ সে আনন্দকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে অনবরত। মনে করিয়ে দিচ্ছে -আমরা টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমে পড়েছি। তাতেই বা কি! বর্তমানকে উদযাপন করব না! নিজেকে পুরষ্কৃত করে আরেকটু উৎসাহ নিয়ে তাকে কি এগিয়ে যেতে বলব না! তা কি করে হয়!  আমরা উদযাপন করেছি, নিজেদেরকে খানিকটা অনুপ্রেরণা যুগিয়েছি আরো সামনে এগিয়ে যাবার। তবে সে উদযাপনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন আমাদের শ্রদ্ধেয় এবং ভালবাসার শিক্ষক। তিনিই বাস্তবতার নির্মমতা টুকু চোখে আঙুল দিয়ে বারবার দেখানোর চেষ্টা করেছেন। এ প্রতিযোগিতার ভিড়ে আমরা যেন হারিয়ে না যাই, বারবার সে পথের সন্ধান দিয়েছেন। যাকে কিনা আমরা সবচেয়ে ভয়ের চোখে দেখতাম, তিনিই যে সবচেয়ে আন্তরিক এবং স্নেহবৎসল, কাছাকাছি ন...

পাউডার পাফ: প্রকৃতির রক্তিম কবিতা

ছবি
  পাউডার পাফ—নামটি শুনলেই মনে হয়, যেন প্রকৃতির হাতে গড়া রেশমি স্বপ্ন, এক টুকরো লাল মেঘ! শিশিরভেজা ভোরে, সূর্যের প্রথম আলোয় যখন এর সূক্ষ্ম পাপড়িগুলো দীপ্তি ছড়ায়, তখন মনে হয়, প্রকৃতি নিজ হাতে এক অলৌকিক প্রদীপ জ্বেলে রেখেছে। এই ফুলের রঙ লজ্জাবতীর মতো কোমল, আবার আগুনের শিখার মতো দীপ্তিময়। বাতাসের হালকা স্পর্শে যখন এটি দুলতে থাকে, তখন যেন প্রকৃতির কোনো অদৃশ্য সুরকার তার সেতারে মৃদু ঝংকার তোলে। মৌমাছির গুঞ্জন আর প্রজাপতির ওড়াউড়িতে এ ফুল আরও বেশি জীবন্ত হয়ে ওঠে, যেন মাটির পৃথিবীতে রঙিন কোনো স্বপ্নের দোলা। দক্ষিণ আমেরিকার উষ্ণ মাটিতে জন্ম নেওয়া পাউডার পাফ আজ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা দেশে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Calliandra haematocephala, যা গ্রীক শব্দ kallos (সৌন্দর্য) ও andros (পুরুষ বা পুংকেশর) থেকে এসেছে, অর্থাৎ এটি তার সুন্দর পুংকেশরের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের বাগান, পার্ক ও রাস্তার ধারে আজ এই ফুলের দেখা মেলে। সৌন্দর্যপ্রেমীরা একে আপন করে নিয়েছে, কারণ এটি শুধু চেহারায় নয়, প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর বন্ধন তৈরি করে। পাউডার পাফ উষ্ণ জলবায়ু ও সরাসরি সূর্যালোক পছন্দ করে। এটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং ৩-৫ মি...

কদম ফুল (Neolamarckia cadamba): প্রকৃতির সুগন্ধি সৌন্দর্য

ছবি
  কদম ফুল কদম ফুল , বৈজ্ঞানিক নাম Neolamarckia cadamba , দক্ষিণ এশিয়ার এক অত্যন্ত জনপ্রিয় ফুল। এর সুগন্ধি, আকর্ষণীয় রঙ এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব একে প্রকৃতির এক বিশেষ দান করে তুলেছে। বাংলায় এটি "কদম ফুল" নামে পরিচিত, যা বর্ষার প্রতীক হিসেবে সাহিত্যে, সংগীতে এবং লোকগাথায় বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। চেহারা ও বৈশিষ্ট্য কদম ফুল গোলাকার এবং ছোট ছোট হলুদ-কমলা রঙের পাপড়ি নিয়ে গঠিত, যা দেখতে এক অনন্য সুন্দর বলের মতো। বর্ষাকালে এই ফুল ফোটে, যা মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য ও সুগন্ধ ছড়ায়। এর সুবাস মৌমাছি, প্রজাপতি এবং অন্যান্য পরাগসংযোগকারীদের আকৃষ্ট করে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক। সাংস্কৃতিক ও পৌরাণিক গুরুত্ব কদম ফুল ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাসে গভীরভাবে প্রোথিত। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, এটি শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় ফুল হিসেবে বিবেচিত হয় এবং অনেক ধর্মীয় কাহিনিতে কদম ফুলের উল্লেখ পাওয়া যায়। বাংলা সাহিত্যেও কদম ফুলের বিশেষ স্থান রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামসহ অনেক কবির কবিতায় কদম ফুলের সৌন্দর্য ও সুগন্ধ বর্ণিত হয়েছে। বর্ষাকালের আগমনের সঙ্গে কদম ফুলের প্রস্ফুট...